
চুল পড়া বন্ধ করার উপায় – বর্তমান সময়ে চুলপড়ার সমস্যায় আমরা প্রায়ই ভুগে থাকি। এটি ভিটামিন জনিত সমস্যার কারণেও হতে পারে। বা অন্য কারণেও হতে পারে। আজকের আর্টিকেলে আমরা চুল পড়া বন্ধ করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো।
চুল পড়া বন্ধ করার উপায়চুল পড়ার সমস্যা নারী-পুরুষ উভয়ের ভুগে থাকেন। তবে পুরুষরা যেহেতু বেশিরভাগ সময়ে ঘরের বাইরে কাজে সময় কাটান। তাই তাদের চুল বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিশেষ করে রোদে বা অন্যান্য কাজে, এছাড়াও নারীরা চুলের যত্ন যত বেশি নেন, তার একভাগও পুরুষরা করেন না। সবমিলিয়ে কম বয়সেই অনেক পুরুষের চুল পড়ার সমস্যায় ভোগেন। কারো কারো মাথার চুল পড়ে টাক হয়ে যায়। আর মাথায় চুল কমে গেলে আত্মবিশ্বাস কমে যেতে থাকে।

চুল পড়ার সমস্যা নিয়ে বেশি দুশ্চিন্তা করার কিছুই নেই। জীবনযাত্রার পরিবর্তন ও ঘরোয়া কিছু উপায় অবলম্বন করার মাধ্যমে, চুল পড়া বন্ধ করা যায়। তবে অনেকেরই জিনগত কারণে চুল পড়ে সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। এই পোস্টে আমরা ঘরোয়া পদ্ধতিতে চুল পড়া বন্ধ করার উপায় সম্পর্কে আলোচনা করবো। যাদের চুল লম্বা হয় না, তারা এই আর্টিকেলটি পড়ুন– চুল লম্বা করার ঘরোয়া পদ্ধতি

১০ টি চুল পড়া বন্ধ করার উপায়
চুল পড়ার পরিমাণ বেড়ে গেলে ঘরোয়া উপায়ে, হারানো চুল ফিরে পেতে পারেন। তাও আবার মাত্র দুই সপ্তাহে। চলুন জেনে নেয়া যাক, চুল পড়া বন্ধের কার্যকরী ১০ টি উপায় সম্পর্কে।
- চুল পড়ার সমস্যা সমাধানে ভিটামিন-ই চুলের গোড়ায় ব্যবহার করুন। ভিটামিন-ই মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে দেয়। ফলে চুলের ফলিকল উৎপাদনশীল থাকে। এছাড়াও ভিটামিন-ই চুলের স্বাস্থ্যকর রং বজায় রাখে।
- অনেক সময় খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন হলে বা শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি হলে, চুল পড়ে যায়। তাই খাদ্যতালিকায় চর্বিযুক্ত খাবার যেমন: মাংস, মাছ, সয়াসহ প্রোটিনযুক্ত রাখুন। এগুলো চুলের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে, এবং চুল পড়া বন্ধ করতে সাহায্য করে।
- নিয়মিত চুল পরিষ্কার রাখা জরুরি। এতে চুলের গোড়ায় জমে থাকা ময়লা সহজে দূর হয়। ফলে চুল পড়া বন্ধ হয়। মনে রাখবেন চুল অপরিষ্কার থাকলে, খুশি ও মাথার ত্বকে সংক্রমণের আশঙ্কা বেড়ে যায়। ফলে চুল পড়া শুরু হয়।
- কখনো ভেজা চুল আঁচড়াবেন না, অনেক পুরুষই এই বিষয়টি মানতে চান না। ভেজা অবস্থায় চুলের গোড়া নরম থাকে, ফলে চিরুনি দিয়ে আঁচড়ানোর সময়, চুল পড়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। গোসলের পর ভালোভাবে চুল শুকিয়ে আঁচড়াবেন।
- ঘরোয়া পদ্ধতিতে চুল পড়া বন্ধ করতে ব্যবহার করতে পারেন। রসুন-পেঁয়াজ বা আদার রস। এই উপাদানগুলোর রস রাতে মাথার ত্বকে ব্যবহার করুন। সারারাত রেখে সকালে চুল পরিষ্কার করে ফেলুন। এক সপ্তাহ নিয়মিত এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে, ফলাফল পাবেন হাতেনাতে।
- শরীরে পানি শূন্যতার সৃষ্টি হলেও চুল পড়ার পরিমাণ বেড়ে যায়। তাই চুল পড়ার সমস্যা বেড়ে গেলে, বুঝবেন আপনার শরীরে হয়তো পানিশূন্যতা হয়েছে। তাই দৈনিক অন্তত ২ থেকে ৩ লিটার পানি অবশ্যই পান করুন। যা আপনাকে যেকোন রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করবে।
- মাথার ত্বক যেন বেশি তৈলাক্ত না থাকে। অনেকেরই মাথার ত্বক বেশি ঘামে। ঘামের কারণে মাথার ত্বকে বেশি ময়লা জমে। ফলে পুরুষের চুল পড়ার পরিমাণ বেড়ে যায়। এজন্য অ্যালোভেরা ও নিম যুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। তাহলে মাথা ঠান্ডা থাকবে, ও মাথা কম ঘামার কারনে চুল পড়া থেকে রেহাই পাবেন।
- ধূমপান ও মদ্যপানের কারণে চুল পড়ে যেতে পারে। ধূমপান করলে মাথার ত্বকে প্রবাহিত রক্তের পরিমাণ কমে যায়। ফলে চুলের বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয়। তাই ধূমপান এবং মদ্যপান এড়িয়ে চলুন।
- দৈনিক শরীরচর্চা করুন। দিনে অন্তত ৪০ মিনিট হাঁটাহাঁটি করুন। পাশাপাশি সাঁতার কাটা ও সাইকেল চালানো যেতে পারে। এতে হরমোন ভারসাম্য বজায় থাকবে। স্ট্রেসের এর মাত্রা কমবে, ফলে চুল পড়া কমে যাবে।
- গ্রিন টি ব্যবহারে চুল পড়ার সমস্যা কমে। এ জন্য এক কাপ পানিতে দুটি গ্রিন টি ব্যাগ মিশিয়ে নিন। তারপর তার ঠাণ্ডা করে মাথার চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত ব্যবহার করুন। ঘণ্টাখানেক পর ধুয়ে ফেলুন। ৭ থেকে ১০ দিন, একটানা ব্যবহারে চুল পড়ার সমস্যা সমাধান হবে।
নিয়মগুলো যদি মাত্র দুই সপ্তাহ অনুসরণ করা যায়। তাহলে আপনার চুল পড়ার সমস্যা ৮০ পার্সেন্ট সমাধান হয়ে যাবে। তারপরও যদি না কমে তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন।
চুল পড়া বন্ধ করার উপায় – Neem Ayurvedic Oil – স্ক্যাল্প ইনফেকশনের কারণে চুল পড়ার সমস্যা বাড়লে এই তেল খুবই কাজে দেয়। সেক্ষেত্রে স্ক্যাল্পের ইনফেকশন সারিয়ে নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে নিম তেল। আরও পড়ুনঃ
চুল পড়া বন্ধ করার উপায় – Minoxidil – প্রাথমিকভাবে চুলের বৃদ্ধি এবং পুরুষদের মধ্যে ত্বকের চিকিৎসার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। এই ঔষধটি মাথার ত্বকের সামনের অংশের চুল পড়া এবং টাক পড়ার ক্ষতি করেনা। এই ওষুধের প্রায় দুই শতাংশ মহিলাদের জন্য ব্যবহার করা হয়। যেসব মহিলাদের চুল পাতলা হওয়ার সমস্যা আছে।
চুল পড়ার কারণ
চুল পড়ার কারণ হলো মানসিক চাপ। নিম্নমানের জীবনযাত্রা, সুষম খাবারের অভাব, ঠিক সময় না ঘুমানো, কিংবা অপর্যাপ্ত ঘুমে চুল পড়ে যেতে পারে। এছাড়া হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, প্রচুর ভ্রমণ, চুল জীবনচক্র সমস্যা তৈরি করতে পারে। বড় একটা সময় ধরে চলে তাতে দীর্ঘস্থায়ী চুল খোয়াতে হবে।
চুল পাকার কারণ
চুল পেকে যাওয়ার অন্যতম কারণ হলো। অপুষ্টি, ভিটামিন ও মিনারেলের অভাবে অনেকের চুল অসময়ে পেকে যায়। অতিরিক্ত রাসায়নিক ব্যবহার করলে, চুল পেকে যেতে পারে। সব প্রসাধনী সব বয়সের মানুষের জন্য উপযোগী নয়। ভেজাল খাবার, পরিবেশ দূষণের জন্য চুল পেকে যেতে পারে।
শেষ কথা
চুল পড়া বন্ধ করার উপায় – সম্পর্কে আলোচনা টি এখানেই সমাপ্তি করছি। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত আপডেট পেতে আমাদেরকে গুগোল নিউজ ফলো করুন। আমাদের ওয়েবসাইটে দৈনিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত আর্টিকেল প্রকাশিত হয়। পাশাপাশি অনলাইন ইনকাম বাংলা ভাষায় অনলাইন সমস্যার সমাধান সম্পর্কিত আর্টিকেল প্রকাশিত হয়। এত সময় আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

